বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১১

এক একটা ঝান্ডা উড়ছে


একদম এখানেই দাঁড়িয়ে ,
আমাদের  বিশ্বাস কে হাতের ঝান্ডা করে নিয়েছি , উড়ছে ওটা
সুর্যের আলোর মত ওটা বিচ্ছুরিত  হতেই ,
একদল মানুষ বস্তুবাদ শব্দটার বিপক্ষে স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে এলো ...
আর ভোগবাদীরা তখনও স্ক্রিনে স্ক্রিনে উন্মাদ।
এক থালা মদের পেয়ালা হাতে তখনও পুরুষের কাছে ধেয়ে আসছে নারী কিংবা ধ্বংস ...
দূর্গের মত গড়ে ওঠা সাহসীর সংখা বাড়বেই জেনে ,
কত মা যে তার পাজর ছিড়ে সাজিয়ে দিল বুকের মানিক,
কত ফুল শয্যার গোলাপ ছেড়ে বেরিয়ে আসছে চিহ্নিত যোদ্ধা,
কত তেজদ্বীপ্ত ধনী তার  জরীদার ঘর উজার করে বিলিয়ে দিল কে জানে ?
আর যারা লেবাসে কুরান সাজিয়ে রাত ঘুমে বেহুশ,
কি জানি তারা কোন পথে ঘুম ভাঙ্গা দুঃস্বপ্ন দেখে চমকে উঠে !!
এক একটা শ্রমিকের ঘামের অপরুপ বিনিময়,
এক একটা সত্য শাসকের ভীত অন্তর,
অথবা, প্রশান্ত চিত্ত মুমিনের প্রসংশার উচ্চারন
আজ এক একটা ঝান্ডা হয়ে উড়ছে  আমাদের হাতে ...  
ঠিক এখানেই দাঁড়িয়ে, এই সবুজ নদীর জলধারা থেকে
জান্নাতের নেশায়, সুখ তারাকে  যারা ভুলে গেল ,
চিনে নিক, চিনে নিক তাদের ঠিকানা আজ, এইখানে দাঁড়িয়েই...



বন্দীত্ব

সমস্ত প্রকাশের ভাষা গচ্ছিত থাকুক গহীন নিঃশব্দের সিন্দুকে
আর কোন কবিতা নয়,
সুরের মূর্ছনার নান্দনিক ঝংকারকে বন্দী করে রাখলাম,
একটা ভাঙ্গা বেহালার ছেড়া তারের অন্ধকারে ।
মন কে এতক্ষণে বলে দিয়েছি, তুমি এখন থেকে নির্বোধ,
মনের ভেতরে জমে থাকা কান্নার শব্দগুলো ধুয়ে মুছে ছাপ করে রেখেছি ,আর-
মনের চোখে এখন একটা লেন্স এঁটে আছে শুধু,
যে লেন্সের দর্শন শক্তি সাদাকালোর মধ্যে সীমাবদ্ধ ...
কিভাবে শুধালে একটা পরিপূর্ণ আকুতির বহিঃপ্রকাশ হয়,
সেটা আর জানতেও চাইবেনা এই মন , বলে দিয়েছি।
একটা বাজ পাখি এসে তুলে নিয়ে গেল ভাল লাগার দ্যোতনা , তাতে কি ?
মনকে তাই বলে দিয়েছি, ভাল লাগা কিসে তার কোন সংজ্ঞাই তুমি বোঝনা আর ...
ভালবাসা শব্দটা খুব স্বার্থপর একটা শব্দ, তাই
মনকে আটকে রাখলাম একটা দরজা জানালা-হীন অন্ধ কুঠুরিতে,
যেখান থেকে ঐ স্বার্থপর শব্দটার বিকট আওয়াজ আর মনকে বিক্ষিপ্ত করতে পারবেনা...
হাতের আঙ্গুলগুলো কে লুকিয়ে রাখলাম, ওরা আর লিখবেনা
শব্দের জড়োয়ায় গাঁথবেনা কোন শব্দের জঞ্জাল ...
শুধু খোলা থাকলো একটাই পথের ঠিকানা ...
যে পথ দিয়ে মন  কোন অশ্রুহীন , আবেগহীন,  শক্তিশালী স্রোতের নকশা একে চলবে ...
অথবা শুধু মৃত্যুর প্রতীক্ষায় একটা সাদা চাঁদর বুনে চলা ...

দুঃখগুলো নির্বোধ, বোবা কিংবা কালা ...

শুশ্রূষার পথ চেয়ে কত ভোর সন্ধ্যার সাথে মিশে গেলো
ঔষধের শিশিগুলো শিয়রে রেখে কত সিজদায় বিগলিত আবদার ।
এক গোছা ফুল নিয়ে অনেক সুহৃদ এসেছিল
হাসির জরি দিয়ে শুভ্র মেঘ একে গিয়েছিল সাদা বিছানায় ...
আর কতকাল ?
আর কত রাত ঔষধের শিশি নিয়ে মায়াবতী নার্সের আনাগোনা ?
আর কত পরে থাকা সাদা বিছানায়, অসহায় ?

সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১১

চলে যাওয়া নাকি ফিরে চলা ?


আসা এবং চলে যাবার মাঝখানে কিছুটা সময়
যেমন জন্ম, যেমন মৃত্যু
আর, কিছুটা অবুঝ ঔদ্ধত নিষ্টুর নড়াচড়া,
একটা প্রচ্ছন্ন আকুতির আবরনেও চলে যাবার ঘোষনা...
এই চলে যাওয়া কি সত্যিই চলে যাওয়া ?
নাকি ফিরে চলা ?
যেমন চলে গেলেন নাসের খান
যেমন চলে গেল সদ্য পৃথিবীর স্পর্শে কেঁদে ওঠা শিশুটি
কিংবা যেমন চলে গিয়েছিলেন সুমাইয়া ... আরও সুজন, কিংবা অচেনা
নাহ, চলে যাওয়া নয়
বরং ফিরে চলা নিজ ঠিকানায়...

বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১১

আত্বপক্ষ ??


খুব সহজেই বলে ফেলি পাহাড় ডিঙ্গাবো,
ওই দূর নীলিমায় অন্তহীন উড়ে যাবো ঠিক
অথবা,
মনের আকাশে খুব সহজেই জ্বলে ওঠে
অনেক কল্পনা বিলাশি তারা।
এত উদবেলিত হয়ে ওঠে অন্তরটা,
মনে হয় এক্ষুনি ঝাপিয়ে পরি সব অসুন্দরের একদম বিপক্ষে
কিংবা,
পৃথিবীতে সঙ্কুচিত হয়ে আসা বিশ্বাসের ঠিকানা খুঁজতে বেড়িয়ে পরি অজানার পথে।
মাঝে মাঝে আল মাহমুদের কবিতার মত যুদ্ধের হাহাকার ধেয়ে আসে
মুহুর্তেই কোথা থেকে এক দীর্ঘদেহী ঘোরসওয়ার  সামনে দিয়ে লাফিয়ে চলে যায়।
হায় আবেগ ! শুধু
নুয়ে পরি এখানেই, এই জমিনে , পৃথিবীর রঙ আঁকড়ে বেঁচে থাকার লোভ ...


বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১১

প্রয়োজন


লোহার সেকল দিয়ে শুরু 
মিছিলের শ্লোগান থেকে অন্তরে বারুদের ঘনঘটা
উৎপীড়নের বিদ্যুৎ থেকে গ্রেনেড থাবার আনাগোনা 
জমিনে রক্তের গন্ধ ছুটে গেলে, 
ঘরে ঘরে জমে ওঠে এক একটি সাহসী আখরা
ওরা ভাবে এই মৃত্যুর ঝঞ্ঝা বুঝি এঁটে দেবে সূর্যের সামনে কোন কালো দরজা 
আর সোনালী তোড়নের দিকপালেরা নিঃশেষ হয়ে যাবে সহসাই
আসলে কি তাই ?
এখানেই ইতিহাস চিৎকার করে সাক্ষী দিয়ে চলেছে বাড়ন  বার  
জুলুম শকুন খামচে ধরেছে যেখানেই জনপদ
তুমুল তিমির ঘেঁষে ঘুটঘুটে কালো রাজপথ 
হে-জাজের কাফেলা সামনে, সেখানেই উঠেছে জেগে মঞ্জিলে মকসুদ।
তবু আজ এই দুর্যোগে, সিজদায় সিজদায়, প্রতিটি প্রার্থনায়
আজ শুধু প্রয়োজন,
বড় বেশি প্রয়োজন- ঈমানের গুনে বলিয়ান, সাহসী মুসলমান    

মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১১

তখন কি আর তাকে তোমার মনে পরে ??



যেখানে সীমানা ফুরিয়ে গেলে,,
মনে হয় সব বুঝি মিছে মায়া জাল,
ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য সব কিছুর ভেতর নিঃশেষে থাকে শুধু ছাই
হাতের উপর ও আর হাত থাকেনা
মনের পাশে গোলাপ গোলাপ ফুল থাকেনা
কার্নিশের আলোর খেলায় মন বসেনা
বুঝতে কি পারো তখন )
কতটা নগন্য এই ছোট্ট জীবন ?
তখন কি আর তার কাছে খুব মন সঁপেছো?
ইচ্ছে কি হয়, অন্তরে তার নামের গুণে শান্তি নামুক ?
খুশির জরীন আভায় যখন মুখটা জুড়ে রৌদ্র জ্বলে
চারপাশে যা কিছুই দেখি
অমন করে মুগ্ধ হয়ে চোখের কোনায় জোনাক ফুটে
সকাল সাঁঝে হঠাৎ যদি বৃষ্টি ঝরে,  
কেমন যেন সুখ সুখ বিচ্ছুরনে প্রাণটা হারাও
তখন কি আর মনে থাকে (?)
তার কথা ? তার বন্দনাতে তখন কি আর হয়েছো জুব  ?

সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১১

এপিটাফ



বিলুপ্ত এক নগরীতে পরে আছে আমার শরীরের উচ্ছিষ্ট করোটি ও হাড়
কি তুচ্ছ, কি নগণ্য দেখো!!
অথচ আমৃত্যু ছিল বেঁচে থাকার তুমুল লড়াই
ফিরে চলা এক নদীকে যেন ঠিক স্রোতের উল্টো দিকে
টেনে নিয়ে যাবার এক মূর্খ প্রচেষ্টা …

ফারাক

বাতিঘরগুলো আলোকশূন্য ছিলনা এমন
এমন পারিজাত ঘুমের ভেতরে মগ্ন ছিলনা সেনাপতির খুন রাঙ্গা পথ
বাসস্থানগুলো এমন টেরাকোটার নকশাখচিত ছিলনা বোধয়
বরং, সেখানে ছিল শুধুই এক আলৌকিক গৃহসজ্জা …
দূর্গগুলোও এত বেশি সাহসশূন্য ছিলনা তখন।
উচ্চারিত শব্দ আর সিনার ভেতরে আস্থার মধ্যেও
এত বেশি দূরত্ব ছিলনা জানি।
আসলে ঈমানের ভেতরে মনন ছিল
দরজার ওপারটায় গন্তব্য ছিল সোজা …

শংকা

ভাবো,
এখন প্রতিবাদের শব্দগুলোও তোমার আমার দিকে তাচ্ছিল্যের হাসি ছুঁড়ে মারছে  
 আমাদের উচ্চারিত শব্দের তেজশুন্যতার বলয়ে হারিয়ে যেতে চলেছে মানবিক প্রেম
হাতের মুষ্টি থেকে ছুটে চলে গেল সাহসের স্বাধীনতা , আর
অমাবস্যার মত অন্ধকারের পুরুত্বে চাক চাক রহস্যের গন্ধ
মনে করো,
চারিদিকে যুদ্ধের ঘন্টাধ্বনি,
কিন্তু যুবকেরা সব পালিয়ে গেল উপত্যকার পেছন দিকটায় ...
বেঁচে থাকার মিথ্যা আশায় !!
মসজিদের মিনারগুলো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে
কিন্তু আজানে আজানে এখন আর মুখরিত হয়না বিশ্বাসীদের শীতল আত্মা
ধরো,
নিরাপদ দূরত্ব বলতে আর কিছু নেই
জখম , রক্ত, ওহ! চারপাশে শুধু মৃত্যুর দাপট
মা কিংবা প্রেয়সীকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার সময় বিলীন
রাওয়াহার মত তুমি কিংবা আমিও কি পারবো তখন, ছুটে যেতে  ??
তুচ্ছ করে পৃথিবীর মায়ার বাঁধন !!

লড়াইয়ের চুড়ান্ত পথ

পারাপারের সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে
ওপারে যাবার একটা ডিঙ্গি নৌকাও এখন আর নেই
এই নির্জন নদীতটে উতকন্ঠার কালো চাদর গায়ে দাঁড়িয়ে আছে একটি প্রজন্ম …
পেছনে অসীম শুন্যতার তুমুল হাহাকার
আর সামনে বিশাল স্রোতস্বিনী মাড়িয়ে সোনালী গন্তব্যের হাতছানি 
কিন্তু,
পারাপারের জন্য যে একটি ডিঙ্গি নৌকোও আর অবশিষ্ট নেই !
ওপারের স্বপ্নে বিভোর চোখগুলো এখনো ভুলতে পারছেনা ধ্বংসের তান্ডব
ক্রমেই ফিকে হয়ে যাওয়া লাশের গন্ধ এখনও তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে !
একে একে আত্মাগুলো যখন ভুলে গেল সত্য আর মিথ্যার প্রভেদ
রক্তাক্ত বদরের স্মৃতি মুছে গেল মনের সীমানা থেকে।
একটা একটা করে শান্তির বৃক্ষগুলো উপড়ে ফেলা হল
ইবলিশের অট্টহাসিতে আকাশ বাতাস তখন ভারী
ঠিক সেই মুহুর্তে ,
আদ আর সামুদের মত গুঁড়িয়ে গেল অবিশ্বাসীদের সমস্ত হুংকার , 
তখনো হেরার রশ্মি আঁকড়ে ধরে থাকা
কিছু বিচ্ছুরিত আলোর কণা ঝিলমিল করছিল…
নাজ্জাসির দরবারে দৃঢ় প্রত্যয় বুকে ঠিক যেমন দাঁড়িয়ে ছিল জাফর ।
এই পরিচর্যাহীন সময়ে,নদীতটে একাগ্র সেই আলোর কণাগুলো এখন এক নির্ঘুম অপেক্ষায়
কিন্তু ওপারের যাবার জন্য যে একটা নৌকার আজ খুব প্রয়োজন !  
তবু এই দুর্গম তাবুকের মত পথ বেছে নেয়া প্রশংসিত প্রাণগুলো
ওপারের তামান্নায় উচ্ছ্বসিত আত্মাগুলো
স্রষ্টার ভালবাসায় উদবেলিত অন্তরগুলো
বেছে নেবে লড়াইয়ের চুড়ান্ত পথ …