বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০১১

নতজানু


এক মুঠো মুগ্ধ হাসি ধার করেছিলাম,
তুমি বলেছিলে, এ হাসির তুলিতে রঙ মেখে এঁকে নিও পথ,
তারপর অনিন্দ বেদনার পাশ ঘেষে চলাচল, উঁকিঝুকি
রোজ জানালার শার্শিতে বাতাসের খুনসুটি।
ছকে বেঁধে ছিলনা কিছুই,
পশ্চিমে নতজানু ভালবাসা, দেখেনি দ্বিতীয় প্রেম
খোঁজেনি সুখ দিয়ে মোড়ানো কোন দখিনা জানালা,
তবু এক মুঠো মুগ্ধ হাসির কাছে বরাবর দ্রবিভুত খুব
পুরোনো বই ঘেটে খুঁজে পাওয়া  চিঠির  মত
দৌড় দিয়ে ঘুরে এসেছি পেছন দরজা থেকে,
অথবা, সারাদিন চাকচাক ব্যস্ততার ভীড়ে এক মুঠো মুগ্ধ হাসির অপেক্ষা ...
এভাবেই এতপথ এঁকেছি সে হাসির তুলিতে,
মন শুধু ঢেকে ছিল অলৌকিক বিশ্বাসের আলোকছটায়,
মুখ শুধু ঢেকে ছিল অধরার অচেনা নেশায় ...
প্রান শুধু ছেয়ে ছিল প্রজাপতি ভোরের ফুলে ...
এক মুঠো হাসি তুমি দিয়েছিলে মিষ্টি ভুলে ...

রবিবার, ৮ মে, ২০১১

শেষ ঠিকানার অভিমুখে ...

কেউ জানেনা, চুপিসারে কে কোথায় আঁধারে মিলায়
উচ্ছ্বাস, চন্দ্রালোকের মত চোখগুলো কোথা উবে যায় 
কেউ জানেনা !!
শরতের সন্ধ্যাধোয়া এক গোছা বুনো ফুল হাতে
কেউ কবে বলেছিল- খুব ভালোবাসি, 
নিয়ন আলোর নেশায় হাত রেখে পথ ভরে শুধু চেঁচামেচি ...
তারপর টোনাটুনি একডালে বসবাস, 
এক নদী জীবনের বক্ররেখার কাছে 
শহুরে আমোদ ভেদে বেড়ে চলা গতি দিল ডুব
ডুব দিল সমুদ্রসখার কাছে...
কেউ জানেনা তারপর কে কোথায় ঝান্ডা উড়ায়...
কেউ জানেনা সুদূরের বার্তা হাতে কোথা থেকে হাতছানি দেয় ...
কেউ জানেনা ,
উচ্ছ্বাস, চন্দ্রালোকের মত চোখগুলো কোথা উবে যায় 
কেউ জানেনা, চুপিসারে কে কোথায় আঁধারে মিলায় !!

তোমার গোত্রে আমার অনেক খাঁজনা আছে বাকি


এতটা দিঘল রাত্রি হেঁটে এসে
 অস্ফুট ভোরের আলোর জরোয়ায় তোমাকে বেশ মানাবে,
এইতো বলেছিলে তুমি
তোমাকে  প্রায় বলতে শুনতাম-
 সিজদা ও প্রার্থনার সুখের সাথে আর কিসের তুলনা চলে ?
সংসারের সীমান্তের বেড়ায়, নুন সুরকীর আর্তনাদ
উনুনের চারপাশে উন্মুখ হয়ে বসে থাকা প্রতিচ্ছবিগুলোকে
তুমি কি সযত্নে পরিয়ে দিতে  বিশ্বাসের মালা !!
কখনও অন্তরে যন্ত্রণার পাহাড় ধারণ করে
তুমি বিলিয়ে গিয়েছো সুখের প্রজাপতি
 মনে হয়, তুমি  কোন অদ্বিতীয়া পৃথিবী,
ঠেসে আছো বৃষ্টির অঝর ধারার মত ভালবাসা,
ঝর্ণার মত স্নেহের পংক্তিমালা
আবার কখনও তোমাকে মনে হয় তুমি আকাশ,
 উড়ন্ত সাদা মেঘের মত বেহিসেবি মমতার পারিজাত সোনালী ভূবন 
তোমার আঁচলের ওম নিতে নিতে আজ এই মাঝে পথে কি করে ভুলি ?
কি  অসম্ভব তীব্র , নির্মল ভালবাসার ঋণে আমি নুব্জ।






সোমবার, ২ মে, ২০১১

বসুধা

এইখানে বসবাস, মন নিয়ে চাষবাস
ভুরি ভুরি অভিলাষ,
এইখানে কত ঢেউ, সারাক্ষন ঘেউ ঘেউ
যুদ্ধেই মেতে আছে কেউ কেউ
এইখানে স্বপ্নের তোড়জোড় শঙ্কায় ফোটে ভোর
আটোসাটো মন জুড়ে শুধু ঘোর
এইখানে বৃষ্টিরা ফেলে ধুম, সহসাই আঁকে চুম
এলোমেলো চিন্তা ঘুম ঘুম।
এইখানে শক্তির দৌড়ঝাপ, হেরে গেলে মহা পাপ
দুর্বল হওয়াটাই অভিশাপ
এইখানে রাতঘুমে কত ভয়, ভয়ানক সংশয়
সত্যের পরাজয়
এইখানে ব্যবধান ঘুঁচে না, গরীবের দুখ কভু মুছে না
নিঃস্বকে কেউ তবু পুছে না
এইখানে তবু বাঁচতেই চাই, সীমাহীন আশা তাই !! 
প্রাণপণে ছুটে যাই ...

বেহুশ নামা

জানতে চাস ?
হাতের পাশে এখন কেন কলম ছাড়া অস্ত্র রাখা  ?
বলতে পারিস?
কিসের এত আস্ফালনে অশ্রুবানে দুঃখ ঢাকা ?
দেখতে পারিস ?
রক্তচোষার খুন পিপাষা , অট্টহাসির বেধুম নেশা ?
বুঝতে পারিস ?
ধ্বংস লীলা,মৃত্য কামড়,ওদের এখন নিত্য পেশা ?
গুনতে পারিস ?
লাশের উপর প্রতিদিনই পরছে লাশ ?
শুকতে পারিস ?
ওই অদূরেই ঠেসে আছে সর্বনাশ  ?



এভাবেই একদিন,
এলো দিন সেই দিন
বিদায়ের লগ্নে স্মৃতিগুলো অমলিন ।
উঠোনের মুঠো রোদ
গুঁজে নিয়ে পকেটে
সারাদিন গুন গুন হাসি গান
এর মাঝে আগামির সন্ধান ...
হাঁটি হাঁটি পা পা , রাস্তা
আমি তুমি দেখা হলে হেসে খুন
মনে পরে টিফিনের  গুন গুন ...
চিরকুটে দুষ্টুমি কবিতা,
কার্টুন আঁকিবুকি, ছুটোছুটি, লুটোপুটি
তাড়া দেয় সেদিনের সব গুলো খুঁনসুটি...
এরপর এলো দিন সেই দিন
বেড়ে গেলো জীবনের যত ঋন।
পলাশ শিমুল ফুটে ,শীত যায়
নতুন দিনেরা ডাকে আয় আয়।
খুঁচরো পয়সা হাতে স্মৃতিভার
অসময়ে ছিড়ে যায় কিছু তার ।
ভেঙ্গে যাওয়া কিচু কাঁচ টুকরো
ভালোবাসা, মধুসখা, গল্প
আজ তার পরে আছে অল্প...
আবগের স্রোত ধীরে ক্ষীন হয়
কাঁধে চাপে জীবনের যত ভার
পাখি আর মারে নাকো ছয়, চার !!

 16.03.2011

শেষ বারের মত ডেকে নিও

শেষ শয্যায় নিদ্রামগ্ন যাবার আগে
বুকের গভীরে বিশ্বাসের বীজ বুনে দিও তবু,
তবু তো বেড়ে  উঠবে ওপারের কোন তাজা তরুবর ...
তবু একবার বলতে শিখিয়ে দিও শুধু,
“তুমি এক, তুমি অদ্বিতীয়”
শেষ কবে জায়নামাযের শীতল নকশায় শির রেখে,
অশ্রুসিক্ত চোখের কোনায়
এপারের পঙ্কিল ধুয়ে যাবে জানিনা !
তবু তুমি শুধু শেষবারের মত
অন্তর কে ঝুঁকে দিও নিখুঁত প্রার্থনায় ...
ঠিক শেষ কবে, খুব গোপনে
ডিঙ্গিয়ে যাবো তোমার নির্দেশের সীমান্ত, জানিনা !
তবু তুমি শেষ বারের মতো অনির্বান ভালোবাসার স্পর্শে
আমাকে ডেকে নিও, বোলো, ফিরে এসো ...
শেষ কবে, তোমার মন্ত্রমুগ্ধ সৃষ্টি দেখে বলে উঠবো,
তোমার সৃষ্টি যদি হয় এত সুন্দর, না জানি তাহলে তুমি কত সুন্দর ?
জানিনা !
তবু, শুধু শেষ বার আমাকে রাঙ্গিয়ে দিও তোমার রঙ্গে ...

আত্মায় বারুদের বর্ষন



অনেকেই শংকিত, আত্মায় বারুদের বর্ষন,
অনেকটা অনাকাংখিত ছকে বেধে যাওয়ার মত !!
মানুষে মানুষে বিকর্ষন যখন খুব তীক্ষ তীরের মত বিধতে থাকে এখানে সেখানে
তখন ওরা অনেকেই স্রোতের বিপরীতে লাফিয়ে ওঠে
ওরা অনেকেই তখন আগুনের তেজদ্বীপ্ত শিখার মত উত্বপ্ত হুংকারে আন্দোলিত খুব !!
কে যেন একবার বলেছিল, রক্তে ধুয়ে গেলে বুকের জমিন,
শোকের প্রকান্ড দানব থাবায় দুমড়ে গেলে মায়ের মমতা
অথবা, লাশের মিছিল আর প্রার্থনায় উদবেলিত হলে আদম পৃথিবী,
তখনই সঠিক সময় ।
তখনই বিশ্বাসের ঝলকানিতে সন্ত্রস্ত বিহবলিত দানবেরা লেজ গুটিয়ে ভাগতে থাকে
পরাজিত শয়তানের মত ।
আজ এই বেহুশ বেলায়,
ওরা অনেকেই জীবনের নকশা একে গেছে মৃত্যুর রঙ্গে
ওরা অনেকেই এখন ফুসফুসে গেঁথে নিয়েছে ওপারের ফুলের সুবাস
ওরা অনেকেই এখনও ঘোরলাগা সন্ধায় কারাগারে বন্দি শালিক ...

একটি শোক সংবাদ

মাইকিং এর আওয়াজটা কানে আসতেই,
সমস্ত পৃথিবীটা কাফোনে ঢেকে গেল...
একটি শোক সংবাদ...
ইন্নানিল্লাহি ...
মরহুমের নামাযে জানাজা ...
তারপর,
সারা পৃথিবীটা মৃত্যুর হুংকারে যেন কেঁপে উঠল ...
স্বপ্নেও দেখি হুরমুর করে ঢুকে পরল
মৃত্যু আর লাশের নিস্তব্ধতা !