বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১১

প্রয়োজন


লোহার সেকল দিয়ে শুরু 
মিছিলের শ্লোগান থেকে অন্তরে বারুদের ঘনঘটা
উৎপীড়নের বিদ্যুৎ থেকে গ্রেনেড থাবার আনাগোনা 
জমিনে রক্তের গন্ধ ছুটে গেলে, 
ঘরে ঘরে জমে ওঠে এক একটি সাহসী আখরা
ওরা ভাবে এই মৃত্যুর ঝঞ্ঝা বুঝি এঁটে দেবে সূর্যের সামনে কোন কালো দরজা 
আর সোনালী তোড়নের দিকপালেরা নিঃশেষ হয়ে যাবে সহসাই
আসলে কি তাই ?
এখানেই ইতিহাস চিৎকার করে সাক্ষী দিয়ে চলেছে বাড়ন  বার  
জুলুম শকুন খামচে ধরেছে যেখানেই জনপদ
তুমুল তিমির ঘেঁষে ঘুটঘুটে কালো রাজপথ 
হে-জাজের কাফেলা সামনে, সেখানেই উঠেছে জেগে মঞ্জিলে মকসুদ।
তবু আজ এই দুর্যোগে, সিজদায় সিজদায়, প্রতিটি প্রার্থনায়
আজ শুধু প্রয়োজন,
বড় বেশি প্রয়োজন- ঈমানের গুনে বলিয়ান, সাহসী মুসলমান    

মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১১

তখন কি আর তাকে তোমার মনে পরে ??



যেখানে সীমানা ফুরিয়ে গেলে,,
মনে হয় সব বুঝি মিছে মায়া জাল,
ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য সব কিছুর ভেতর নিঃশেষে থাকে শুধু ছাই
হাতের উপর ও আর হাত থাকেনা
মনের পাশে গোলাপ গোলাপ ফুল থাকেনা
কার্নিশের আলোর খেলায় মন বসেনা
বুঝতে কি পারো তখন )
কতটা নগন্য এই ছোট্ট জীবন ?
তখন কি আর তার কাছে খুব মন সঁপেছো?
ইচ্ছে কি হয়, অন্তরে তার নামের গুণে শান্তি নামুক ?
খুশির জরীন আভায় যখন মুখটা জুড়ে রৌদ্র জ্বলে
চারপাশে যা কিছুই দেখি
অমন করে মুগ্ধ হয়ে চোখের কোনায় জোনাক ফুটে
সকাল সাঁঝে হঠাৎ যদি বৃষ্টি ঝরে,  
কেমন যেন সুখ সুখ বিচ্ছুরনে প্রাণটা হারাও
তখন কি আর মনে থাকে (?)
তার কথা ? তার বন্দনাতে তখন কি আর হয়েছো জুব  ?

সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১১

এপিটাফ



বিলুপ্ত এক নগরীতে পরে আছে আমার শরীরের উচ্ছিষ্ট করোটি ও হাড়
কি তুচ্ছ, কি নগণ্য দেখো!!
অথচ আমৃত্যু ছিল বেঁচে থাকার তুমুল লড়াই
ফিরে চলা এক নদীকে যেন ঠিক স্রোতের উল্টো দিকে
টেনে নিয়ে যাবার এক মূর্খ প্রচেষ্টা …

ফারাক

বাতিঘরগুলো আলোকশূন্য ছিলনা এমন
এমন পারিজাত ঘুমের ভেতরে মগ্ন ছিলনা সেনাপতির খুন রাঙ্গা পথ
বাসস্থানগুলো এমন টেরাকোটার নকশাখচিত ছিলনা বোধয়
বরং, সেখানে ছিল শুধুই এক আলৌকিক গৃহসজ্জা …
দূর্গগুলোও এত বেশি সাহসশূন্য ছিলনা তখন।
উচ্চারিত শব্দ আর সিনার ভেতরে আস্থার মধ্যেও
এত বেশি দূরত্ব ছিলনা জানি।
আসলে ঈমানের ভেতরে মনন ছিল
দরজার ওপারটায় গন্তব্য ছিল সোজা …

শংকা

ভাবো,
এখন প্রতিবাদের শব্দগুলোও তোমার আমার দিকে তাচ্ছিল্যের হাসি ছুঁড়ে মারছে  
 আমাদের উচ্চারিত শব্দের তেজশুন্যতার বলয়ে হারিয়ে যেতে চলেছে মানবিক প্রেম
হাতের মুষ্টি থেকে ছুটে চলে গেল সাহসের স্বাধীনতা , আর
অমাবস্যার মত অন্ধকারের পুরুত্বে চাক চাক রহস্যের গন্ধ
মনে করো,
চারিদিকে যুদ্ধের ঘন্টাধ্বনি,
কিন্তু যুবকেরা সব পালিয়ে গেল উপত্যকার পেছন দিকটায় ...
বেঁচে থাকার মিথ্যা আশায় !!
মসজিদের মিনারগুলো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে
কিন্তু আজানে আজানে এখন আর মুখরিত হয়না বিশ্বাসীদের শীতল আত্মা
ধরো,
নিরাপদ দূরত্ব বলতে আর কিছু নেই
জখম , রক্ত, ওহ! চারপাশে শুধু মৃত্যুর দাপট
মা কিংবা প্রেয়সীকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার সময় বিলীন
রাওয়াহার মত তুমি কিংবা আমিও কি পারবো তখন, ছুটে যেতে  ??
তুচ্ছ করে পৃথিবীর মায়ার বাঁধন !!

লড়াইয়ের চুড়ান্ত পথ

পারাপারের সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে
ওপারে যাবার একটা ডিঙ্গি নৌকাও এখন আর নেই
এই নির্জন নদীতটে উতকন্ঠার কালো চাদর গায়ে দাঁড়িয়ে আছে একটি প্রজন্ম …
পেছনে অসীম শুন্যতার তুমুল হাহাকার
আর সামনে বিশাল স্রোতস্বিনী মাড়িয়ে সোনালী গন্তব্যের হাতছানি 
কিন্তু,
পারাপারের জন্য যে একটি ডিঙ্গি নৌকোও আর অবশিষ্ট নেই !
ওপারের স্বপ্নে বিভোর চোখগুলো এখনো ভুলতে পারছেনা ধ্বংসের তান্ডব
ক্রমেই ফিকে হয়ে যাওয়া লাশের গন্ধ এখনও তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে !
একে একে আত্মাগুলো যখন ভুলে গেল সত্য আর মিথ্যার প্রভেদ
রক্তাক্ত বদরের স্মৃতি মুছে গেল মনের সীমানা থেকে।
একটা একটা করে শান্তির বৃক্ষগুলো উপড়ে ফেলা হল
ইবলিশের অট্টহাসিতে আকাশ বাতাস তখন ভারী
ঠিক সেই মুহুর্তে ,
আদ আর সামুদের মত গুঁড়িয়ে গেল অবিশ্বাসীদের সমস্ত হুংকার , 
তখনো হেরার রশ্মি আঁকড়ে ধরে থাকা
কিছু বিচ্ছুরিত আলোর কণা ঝিলমিল করছিল…
নাজ্জাসির দরবারে দৃঢ় প্রত্যয় বুকে ঠিক যেমন দাঁড়িয়ে ছিল জাফর ।
এই পরিচর্যাহীন সময়ে,নদীতটে একাগ্র সেই আলোর কণাগুলো এখন এক নির্ঘুম অপেক্ষায়
কিন্তু ওপারের যাবার জন্য যে একটা নৌকার আজ খুব প্রয়োজন !  
তবু এই দুর্গম তাবুকের মত পথ বেছে নেয়া প্রশংসিত প্রাণগুলো
ওপারের তামান্নায় উচ্ছ্বসিত আত্মাগুলো
স্রষ্টার ভালবাসায় উদবেলিত অন্তরগুলো
বেছে নেবে লড়াইয়ের চুড়ান্ত পথ …

প্রত্যাবর্তনের ধ্বনি শোনা যায় ...

ভেতর থেকে অন্ধকারের শব্দ শুনে
থমকে দাঁড়াই ।
তারপরে এক অট্টহাসির গন্ডগোলে
দৃষ্টি হারাই ।
তুমুল রকম ঝড় তুলে যেই
দুঃখ আসে, অচিন দেশে
হাতটা বাড়াই ।
হাতের ওপর আস্থাগুলো জমাট বাঁধে
লৌকিকতার চার দেয়ালে থাবড় মেরে
কষ্ট তাড়াই ।
কষ্ট কেন ?? তুমিই বলো ,
মনজিল আমার  সোনালী রঙ জরির দেশে
সেই দেশেতে যাদের আবাস পোক্ত হবে
ধন্য তারাই ।
শান্ত দীঘির জলের মত টলমলিয়ে
জীবন ঘেঁষে গোলাপ গোলাপ ফুল ফুটিয়ে
প্রদীপ জ্বালাই ......

31. 07. 2011

আশায় আশায় থাকি

যে জীবন দুঃখ সয়ে, অবিরাম চলছে ধেয়ে
যে জীবন মৌন আলোয়, নিয়ত থাকছে চেয়ে
অশনি অচিন আভা, প্রতিবার কাঁপছে কেমন   
যে জীবন তাতেই প্রহ্‌র, প্রতিক্ষণ গুণছে যেমন।
আশা বীজ করছে বপন, তাতে রোজ ঢালছে পানি
যে জীবন সৃষ্টি সুখের, গতিপথ অসীম জানি।
যেন ঠিক চিত্রকলা, টুপাটুপ মুগ্ধ মায়া
ডেকে নেয় হাতছানিতে, যেন এক আদিম ছায়া
যে জীবন জীবন খেলায়, চিরকাল খুঁজলো যাকে
তাঁরই সেই আরশ পানে, ভেবেছে পাবেই তাঁকে ।
এখানে সেখান থেকে, কত রঙ ডাকছে ডাকুক
ভাবে যে তবুও রোজ, সাদা সব আমার থাকুক।
যে আমি নিজের মাঝে, বুলালো শুদ্ধ ছোঁয়া
সে জীবন প্রেম বিরহে, ফুলেরই গন্ধে ধোয়া
এমন এক জীবন পেতে, কতকাল স্বপ্ন ঘেঁটে
ডিঙ্গাবো বাধার পাহাড়, নিয়েছি মন্ত্র এঁটে।
কী কঠিন পথের বাঁকে, ভুলে দিক খেই হারিয়ে
পেছনে সামনে এখন, ফাঁকা সব হাত বাড়িয়ে …
কোলাহল থামলে শেষে, যদি পাই মিষ্টি হাওয়া
আশা বীজ বপন করে, বলেছি সকল চাওয়া

খোরাক

অনেকটা পথ হেঁটে গেলে
তারপর যদি দেখা মেলে, একটি স্নিগ্ধ নদী ,
খুলে দেবো মনের দুয়ার
ধুয়ে যাক যত আনাগোনা, শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে ধেয়ে আসা কালিমা ।
বহুদূর পথ হেঁটে গেলে,
একটি পাখির গান শুনতে পেলে,
তবে মনের পুরোটা আঙ্গিনা জুরে মৌ মৌ গন্ধ ছুটে হয়ে যাবো ফুল
কিংবা, আধফোটা ভোরের আলোর স্পর্শে পুলকিত শিশিরের কনা,
কিংবা, মধুমতি...

জোড়াতালি

পায়ে পায়ে কথা রোজ,
থেমে যাওয়া কিছু খোঁজ,
শব্দের ঝিলিমিলি আনাগোনা দেখে ডুব
আনমনে ভোর মেখে হেঁটে গেলে রাস্তায়
এই শহরের গতি  বাড়তেই থাকে খুব ...  
বেড়ে চলা গতিপথে রাত নেমে এলো তাই
ঘুমহীন মনগুলো তারা গুনে অযথাই।
চাওয়া পাওয়া মাপজোখ
পরিপাটি রুটিনে অফিসের দৌড়ঝাপ
ওই দূরে মিটিমিটি স্বপ্নের জলছাপ,
ভালবাসা ঝিকিমিকি রোদ্দুরে বন্দি
গধূলির রঙ ছুয়ে পালাবার ফন্দি ...
এই শহরের যত আটোসাটো ঠিকানা
মিলেমিশে এখানেই জড়ো হয় ...
ভাঁজে ভাঁজে জমে থাকা গভীরের বেদনা
পুষে রাখে হারাবার যত ভয় ...
তবু ঘুম ঘোরে গাঁথি সুদিনের হাসিগান
এই বুঝি সব দুখ  মুছে গেল পিছুটান
আমাদের দরোজায়,  চিঠি এসে থেমে যায়,
ফিসফাস কিছু সুখ চুপিসারে রেখে যায়।
দিনগুনি তুমি আমি ,
তাসবি দানার সাথে মিতালি,
একঘেয়ে সময়ের জোড়াতালি থামলেই
মৃত্যুই লিখে যায় জীবনের গিতালী ...