শুক্রবার, ২ নভেম্বর, ২০১২

দেয়াল ভাঙ্গার শব্দ শুনি


ভাবছি কোন মুগ্ধ বিকেল বইয়ের পাতায় উঠবে নেচে
সন্ধাঘনা সিজদা শেষে খুব গোপনে,
শব্দ কিছুর বিনিময়ে মন প্রাসাদে জ্বলবে আলো...
অলৌকিক এক আন্দোলনে রাত ফুরাবে,
বোবা কালা এই নগরীর বার্তা তখন পৌঁছুবে ঠিক
তাদের কাছে -
দেয়াল ভাঙ্গার মহোৎসবে হয়তো দেখা হয়েই যাবে !
ভাঙবে দেয়াল,
পরবে খসে
যন্ত্রণা সব ...
ভাঙবে আরও দুর্বলতার শিকলগুলো ।
দেয়ালগুলো ধীর পায়ে রোজ খামচে ধরে এই নগরী,
দেয়াল ভাঙ্গার শব্দ শুনি এই বিকেলে বইয়ের পাতায় -
দেয়াল ভাঙ্গার বার্তা এখন চতুর্দিকে ...

20.04.2012 


মরিচা


কেউ নেই,
কিছু হাত, পা কিংবা বন্ধ চোখের উচ্ছিষ্ট অংশ ছাড়া ।
কি করে বিশ্বাস করি কেউ আছে ?
আত্মায় পুরাতন সেই ভোগের মরিচা ! 

May 28, 2012 

কে আছিস কান পেতে রাখ


আছে কিছু, হিজিবিজি চেনাজানা  চেহারা
কিছু নিয়মের গুঁতোগুঁতি হানাহানি আছে খুব।
পরিচিত শহরের পথ ঘাট,
আছে আমাকে জরিয়ে থাকা, কারো,  বিশাল আকাশ...
যাকিছুই আছে- পরে থাক
চোখ বুজে থাক সব হিসাবের খাতার পাতা।
আছে চিৎকার,
শুধু নেই কেউ শুনতে পাবার !
আছে দরজা আর চৌকাঠ
শুধু নেই কেউ হাসি মুখে দাঁড়িয়ে থাকার !
তোরা আছিস সবাই, আছে তোদের হাসি
কারো কান্নাও আছে জেনে রাখ,
কান পেতে শুনে নিতে, দরজাটা খুলে রাখ ..

April 30, 2012

পৌনপুনিক ( একটি দূর্লভ প্রেমের কবিতা ) :)


কিছু আলিঙ্গন শেষে সীমানায় দাঁড়িয়ে যখন,
তখনও বুঝিনি, পেছনে কোন পৃথিবীকে দিয়েছি বিদায়...
বুঝিনি সত্যি !
শুধু এক জোড়া ভ্রুর মাঝে খুঁজেছি আর এক নতুন পৃথিবী...
শব্দের ভেতরে শব্দের ভরসা গুঁজে রেখে
ঠাহর করেছি পথ । তাই-
নিবিষ্ট চোখের বিনীত আকুতিই আমার উপহার,
যে যাই বলুক,
এখানেই খুঁজে নিলাম পৃথিবী বার বার ...  

June 30, 2012 

আত্মারা নক্ষত্র এখন


১৯৫৫ সালে স্বাধীনতার এক বছর না হতেই সুদানে ঘটে যায় প্রথম গৃহযুদ্ধ।  এর পর আরো একটি গৃহযুদ্ধে বিদ্ধস্থ দেশটিতে ২.৫ মিলিয়ন মানুষকে হত্যা করা হয়। হাজার হাজার মানুষকে জীবন্ত জ্বালিয়ে মেরে ফেলা হয়। কত বোনের সম্ভ্রমহানি করা হয়েছে তার কোন হিসাব মূলতই নেই। এরপর দীর্ঘ সময়ের রক্তস্রোত থেমে  গিয়ে ৯ জুলাই ২০১১, জন্ম নেয় নতুন একটি দেশ, সাউথ সুদান। জাতিসংঘের ১৯৩ তম দেশ এটি। যে পৃথিবীটিতে আমাদের বসবাস, সেখানে ইতিহাসের পাতায় পাতায়, এক একটি দেশের স্বাধীনতার পেছনের নির্মম রক্তস্রোত আমাদের আতঙ্কিত করেই চলে। তবু কেন বার বার একি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকে ?

সাউথ সুদানের প্রথম স্বাধীনতা দিবসে আমার কিছু অনুভূতির অক্ষর দিলাম...


কে আছো, অক্ষর দাও
শব্দ দাও, চেঁচিয়ে ঘোষণা কর-
রক্তস্রোতের ঠিক বিপক্ষে তোমার মিছিল...
দুই মিলিয়ন আত্মার উপড়ে গড়ে উঠা দূর্গটা দেখেছো কি ?
সদ্য জন্ম নেয়া একটা কৃষ্ণাঙ্গ শিশুর মত হাসিমুখ তার ।
কে আছো আমাকে অক্ষর দাও,
একবার কিছু মানবিক শব্দ ব্যাঞ্জনায় সিক্ত করো কৃষ্ণ আগুন ।
বলো, ঐ আড়াই মিলিয়ন আত্মারা নক্ষত্র এখন, আর -
নিষ্পাপ কালো মুখগুলো এখনো সতেজ, বলো !
কে আছো  ?? অক্ষর দিয়ে স্তব্ধ করো
ফুল হত্যা ...

13.07.2012

উদ্বেগের স্ফুলিঙ্গ তোমার উপমা !!


(এই সাত সকালে খুব ইচ্ছে করছিল দীর্ঘ  পথে খালি পায়ে হাটি, ফরিদপুরের কুমার নদীটার স্নিগ্ধতায় মাখামাখি করার সাধটা ভীষণ পোড়াচ্ছিল মনটাকে। কিন্তু এই ইট পাথরের শহরটাতে বন্দী পাখির মত ছটফট করতে করতে শহরটাকে খুব বকে দিতে ইচ্ছে হল)




কংক্রিট দেয়ালের মোড়কে গোঙান অস্থির শহরটা,
তোমাকেই বলছি,
তুমি আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছ পাখির কথোপকথন,
যদিওবা ওদের ভাষা অনুবাদের যোগ্য আমি ছিলাম না কোনকাল !
তবু এক অকল্পনীয় আত্মীয়তার বন্ধন টের পাই, এখনো জানতো !
প্রতিটি সুবহে সাদিকের আধো আধো আলো বেয়ে চুইয়ে পরা
গুল্মলতাদের অদ্ভুত আলিঙ্গন তুমি কেঁড়ে নিয়েছ,
হ্যাঁ,ইট পাথরের অসহ শহরটা,  আমি কিন্তু তোমাকেই তো বলছি-
তুমি কেড়ে নিয়েছ নগ্ন পায়ের তালুতে মাটির স্পর্শের আনচান। 
তোমার গজিয়ে ওঠা প্রতিটি যন্ত্রণার নিচে সবুজের শুদ্ধতাকে চাপা দিয়ে,
এখন কেবল ধারণ করে আছো যত্তসব মেকি সুখের সংজ্ঞা !!
তুমি ঠিক সরলতার বিপরীত শব্দ, উদ্বেগের স্ফুলিঙ্গ তোমার উপমা ।
প্রকৃতির প্রতিপক্ষ , নদী হন্তারক হে শহর,
তোমার কাছে শুধু আজ, বৃক্ষ আর নদী ভিক্ষা চাই ...

 17.07.12

আমার দিকেও সেই হায়েনার তির ছুটে এলে !


রক্তাত্ব কেন পৃথিবীর ইতিহাস ? একের পর এক ভূখণ্ডে কেন বয়ে যায় রক্তের বন্যা ? আর আমরা কিছু মানুষ শুধু দীর্ঘশ্বাস ফেলেই ক্ষান্ত হই! কেন ?
এই সবুজ বসুধা কি চিরকাল সহ্য করতে থাকবে রক্তের হলিখেলা ? প্রশ্নবানে জর্জরিত আমার অন্তরেও আজ রক্ত ক্ষরণ হয়ে চলেছে :(


এখানেই আমার বসতি ? আমার ?

যেখানে রক্তপাত,

অবিরাম পশুত্বের পদচিহ্ন, মানবিক মৃত্যু

কিভাবে হাসির উচ্ছ্বাসে নিজেকে লুটাই আমি তুমি ?

খাবারের সুস্বাদ কিংবা

নকশা করা বিছানায় গা এলিয়ে নিঃশেষ হয়ে যাওয়া সময়,

অথবা যদি বলি নিজের জন্য শুধু নিজের বলয়ে ঘূর্ণায়মান আমাদের আত্মা !

নিজেকে প্রশ্ন করি শুধু, কতটুকু ? কতটুকু অর্জন মূলতই কেবল আমার ?

দেখছোনা ? নাকি না দেখার ভান করে চলা ?

হ্যাঁ, এখানে তো শুধুই রক্তপাত,

ছিঁড়েখুঁড়ে খাচ্ছে যারা মানবিক অস্তিত্ব,

আমি কেবলই নির্বাক দর্শক তখন ??

আমার দিকেও সেই হায়েনার তির ছুটে এলে

হয়তোবা কোন একদিন,

কোন এক রক্তস্রোতে হয়তো আমিও জেনে যাবো,

নির্বাক দর্শকের ভূমিকা কেমন !!!


৪।০৮।১২